ফ্রোজেন
এলসা এবং এনা- দুই বোনের গল্প নিয়ে তৈরি ডিজনির এই অ্যানিমেশন মুভিটি যেকোনো দর্শকেরই হৃদয় ছুঁয়ে যাবে। বড় বোনের কঠিন অসুখ। শুধু প্রকৃত ভালোবাসা পেলেই সেরে যাবে! ছোট বোন তাই বড় বোনের জন্য প্রকৃত ভালোবাসা খুঁজতে বেরিয়ে পড়ে। এভাবেই কাহিনী এগোয় মুভিটির।
এই মুভিটি থেকে অনেক সুন্দর একটি বার্তা আমরা পাই। সেটা হচ্ছে- প্রায়ই আশেপাশের জিনিসপত্র এবং মানুষের মধ্যে ভালোবাসা খুঁজে বেড়াই আমরা। কিন্তু আমাদেরকে যদি প্রকৃতপক্ষে কেউ ভালোবেসে থাকে, তবে সেটা আমাদের পরিবারই। আর কেউ না। এই ব্যাপারটা টিনএজ থেকেই একজন মানুষের উপলব্ধি করা প্রয়োজন।
কোকো
এটিও একটি অ্যানিমেশন মুভি। ছোট্ট ছেলে মিগুয়েল এবং তার পরিবারকে নিয়েই মূলত মুভিটির কাহিনী এগিয়েছে। মিগুয়েল গান অনেক ভালোবাসে। কিন্তু একটি বিশেষ কারণে তার পরিবারে সব ধরনের গান চর্চা নিষিদ্ধ। একবার রাগ করে সে বাসা থেকে বেরিয়ে পড়ে। হঠাৎ করে সে নিজেকে আবিষ্কার করে অন্য এক দুনিয়ায়। এভাবেই কাহিনী এগোয়। মিগুয়েলের পরিবারে কেন গান নিষিদ্ধ? মিগুয়েল কি শেষপর্যন্ত পারবে অন্য দুনিয়া থেকে নিজের দুনিয়ায় ফিরে যেতে? সে কি শেষপর্যন্ত তার গায়ক হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে? এসব প্রশ্নের উত্তর জানতে আপনাকে দেখতে হবে মুভিটি।
এই মুভিটি থেকেও সুন্দর একটি বার্তা পাওয়া যায়- Never forget how much our family loves us। নিজের পরিবারের সিদ্ধান্তগুলো আমাদের অনেক সময় পছন্দ হয় না। না চাইতেও অনেক তর্কাতর্কি হয়ে যায় এসব নিয়ে। আমরা ভুলে যাই যে, আমাদের পরিবার আমাদের অনেক ভালোবাসে। এই ব্যাপারগুলো উপলব্ধি করতে এই মুভিটি টিনএজারদের দেখা উচিৎ।
গ্রেইভ অফ দ্য ফায়ারফ্লাইস
২য় বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে তৈরি করা হয়েছে এই জাপানী অ্যানিমেটেড মুভিটি। সেইতা এবং সেতসুকো- এই দুই ভাইবোনকে নিয়েই মুলত মুভিটির কাহিনী। আমেরিকার বোমা হামলার ফলে জাপানের অনেক মানুষ তখন ঘরহারা হয়ে পড়ে। বোমা হামলায় সেইতা এবং সেতসুকোর মা মারা যায়। পরে তারা জানতে পারে, তাদের বাবাও আর বেঁচে নেই, কেননা জাপানী নৌ-বাহিনীর অধিকাংশ জাহাজই ডুবে গেছে।
এরপর থেকে শুরু হয় দুই ভাইবোনের জীবনযুদ্ধ। ছোট বোন সেতসুকো আর নিজের খাবার জোগাড়ের জন্য সেইতা এই অল্প বয়সেই ক্ষেতে কাজ করে, ভিক্ষা করে, শেষে বাধ্য হয়ে ছিনতাইও করে! দুই ভাইবোনের বেঁচে থাকার লড়াই যেকোনো দর্শকেরই চোখে পানি এনে দেবে।
যুদ্ধ একটি হাসিখুশি পরিবারকে মুহূর্তে তছনছ করে দিতে পারে– এই উপলব্ধিটি এখনই নিজের মধ্যেআনার জন্য এই মুভিটি টিনএজারদের দেখা উচিত।
ইওর নেইম (কিমি নো না ওয়া)
মিতশুয়া মিয়ামিজু তার দাদী এবং ছোটবোনের সাথে জাপানের একটি স্বল্পোন্নত শহর ইতোমরিতে বাস করে। মিতশুয়া তার এই জীবন নিয়ে একদমই সুখী নয়। সে সবসময় দোয়া করে যেন পরের জন্মে সে একজন সুদর্শন ছেলে হয়ে জন্মায়।
মিতশুয়া একদিন ঘুম থেকে উঠে নিজেকে তাকি তাচিবানা নামের এক ছেলে হিসেবে আবিষ্কার করে! তাকি টোকিওর হাই স্কুল পড়ুয়া এক সুদর্শন কিশোর। আর ওদিকে তাকি নিজেকে আবিষ্কার করে মিতশুয়ার জায়গায়। সারাদিনে যা যা ঘটে, তাকি সেগুলো মিতশুয়ার নোটবুকে লিখে রাখে, আর মিতশুয়া লিখে রাখে তাকির ফোনে। এভাবেই কাহিনী এগোতে থাকে।
অতঃপর তারা দেখা করার সিদ্ধান্ত নেয়। তাকি অনেকবার কল দেয়। কিন্তু কেউ ফোন ধরে না। ঘুমের মধ্যে চরিত্র অদল-বদলও কেন জানি হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যায়। তার ফোন থেকে মিতশুয়ার সংরক্ষণ করা বার্তাগুলো মুছে গেছে। তাকি সিদ্ধান্ত নেয়- যেভাবেই হোক মিতশুয়ার সাথে দেখা করবে। কিন্তু তাকির সব স্মৃতি ধীরে ধীরে মুছে যাচ্ছে। মিতশুয়ার নামটিও কিছুতেই মনে পড়ছে না তাকির। তাকি কি শেষপর্যন্ত পারবে মিতশুয়াকে খুঁজে বের করতে? জানতে হলে আপনাকে দেখতে হবে মুভিটি।
দুই কিশোর কিশোরীর অদ্ভুত ভালোবাসার কাহিনী নিয়ে তৈরী জাপানী এই অ্যানিমে মুভিটির আবেগ সবচেয়ে বেশি টিনএজাররাই অনুভব করতে পারবে!
আপ
কার্ল ছোটবেলা থেকেই দক্ষিণ আমেরিকা এবং প্যারাডাইজ ফল এ যাওয়ার স্বপ্ন দেখতো। একদিন কার্লের সাথে পরিচয় হয় এলির। পরিচয় থেকে বন্ধুত্ব হয়। বন্ধুত্ব থেকে ভালোবাসা আর ভালোবাসা থেকে বিয়ে। তাদের ছোট্ট বাড়িটিতে তারা সুখে-শান্তিতেই বাস করছিলো। এলিরও কার্লের মতো ইচ্ছা দক্ষিণ আমেরিকা এবং প্যারাডাইজ ফল এ যাওয়ার! তারা সিদ্ধান্ত নেয় তাদের বাড়িটিতে অসংখ্য বেলুন লাগাবে এবং বাড়িটি তখন প্যারাস্যুটের মতো তাদেরকে উড়িয়ে দক্ষিণ আমেরিকা এবং প্যারাডাইজ ফলে নিয়ে যাবে। কিন্তু আকস্মিক এক রোগে এলি মারা যায়।
একদিন কন্সট্রাকশন সাইটের জন্য এলাকার সব বাড়ি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ, কিন্তু কার্ল কোনোভাবেই তা মেনে নিতে পারে না। কারণ এখানে রয়েছে এলির হাজারটা স্মৃতি। তখনই কার্লের পরিচয় হয় রাসেলের সাথে। কার্ল শেষপর্যন্ত তার বাড়িটিতে শত শত বেলুন লাগিয়ে বাড়িতে চড়ে প্যারাডাইজ ফল এ উড়ে যেতে পারে কি না তা জানতে হলে আপনাকে দেখতে হবে মুভিটি। একদিকে স্ত্রী এলির প্রতি কার্লের ভালোবাসা এবং অন্যদিকে কার্ল ও রাসেলের অসম বয়সের বন্ধুত্ব পিক্সারের এই অ্যানিমেশন মুভিটিকে নিয়ে গেছে অন্য মাত্রায়। আমাদের ভালোবাসার মানুষগুলোর প্রতি আমাদের আবেগ নিয়ে আরেকবার ভাবতে বাধ্য করবে এই মুভিটি।
ইনসাইড আউট
মানুষের অনুভূতিগুলোর গুরুত্ব বোঝাতে প্রায় ১৭৫ মিলিয়ন ডলার খরচ করে এই অ্যানিমেশন মুভিটি তৈরি করা হয়েছে। মুভিটির প্রধান চরিত্র কিন্তু কোনো মানুষ বা প্রাণী নয়। কাল্পনিক কোনো দৈত্য বা দেবতাও নয়। মানুষের ৫ অনুভূতি- আনন্দ, দুঃখ, রাগ, ভয় এবং বিরক্তিই হচ্ছে এই মুভির প্রধান চরিত্র! শুনতে অবাক লাগলেও এই মুভিটি আপনাকে অনুভূতিগুলো নিয়ে আরেকবার ভাবতে বাধ্য করবে।
আমাদের প্রত্যেকটি অনুভূতি একটি অপরটির সাথে যুক্ত। এই অনুভূতিগুলোর মধ্যে যেকোনো একটির পরিমাণ কমে গেলে বা বেড়ে গেলে মানুষের অনুভূতির পুরো সিস্টেমই কীভাবে ওলটপালট হয়ে যেতে পারে সেটাই অত্যন্ত সুন্দরভাবে দেখানো হয়েছে এই মুভিতে। আশেপাশের সবার সব অনুভূতিকেই গুরুত্ব দিতে শেখার জন্য টিনএজারদের উচিত এই মুভিটি দেখা।